জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
স্বাস্থ্য

শীতকালীন সংক্রমণ, প্রতিকার ও এন্টিবায়োটিক /এন্টিমাইক্রবিয়াল রেজিস্টেন্সের ঝুঁকি।

শীতকালে সর্দি, ফ্লু, নিউমোনিয়া সহ অন্যান্য শ্বাসকষ্টজনিত সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। আমরা বেশির ভাগ সময় আবদ্ধ পরিবেশে যেমন বাসা-বাড়ি, অফিস- আদালতে থাকি। এর ফলে রোগ সৃষ্টিকারী অনুজীব যেমন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া একজন থেকে অন্য জনকে সহজে সংক্রমণ করতে পারে। এই সংক্রমণ যে কোন বয়সের মানুষের হতে পারে, কিন্তু আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ইমিউন সিস্টেমগুলি দুর্বল হয়ে যায়, যার ফলে অনুজীবের বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়ে। শীতকালে আমাদের সংক্রমণ জনিত অসুস্থ হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ হল, কম তাপমাত্রায় কিছু ভাইরাস সহজে বেঁচে থাকতে পারে।

আপনার যদি এই শীতে কাশি এবং হাঁচি হয়, তাহলে কীভাবে বুঝবেন আপনার সর্দি (কমন কোল্ড) বা আরও গুরুতর কোনো সংক্রমণ হয়েছে? আপনার কি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন? আপনি কি অন্যদের সংক্রামিত করতে পারেন?

আপনার সংক্রমণ নির্ণয় এবং চিকিত্সার জন্য নিম্নের আলোচনা সহায়ক হতে পারে।

সাধারণ সর্দি-কাশি (কমন কোল্ড):

দুই শতাধিক ভাইরাস রয়েছে যা আমাদের নাক, কান এবং গলা সংক্রমিত করতে পারে, এদের মধ্যে রাইনোভাইরাস উল্লেখযোগ্য, যার কারণে আমাদের সাধারণ সর্দি-কাশি হয়ে থাকে।

সাধারণ সর্দি-কাশির উপসর্গগুলি হল:

নাক বন্ধ হওয়া, সর্দি, গলা ব্যথা, গলা চুলকানি,এবং মাথাব্যথা, সামান্য জ্বর, ক্লান্তি, হাঁচি এবং কাশি। এই সংক্রমণ শীতকালে সহজেই অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

আপনি কিভাবে সংক্রামিত হয়েছেন?

কেউ আপনার কাছাকাছি কাশি বা হাঁচি দিয়েছে বা আপনি কোন সংক্রামিত বস্তু স্পর্শ করেছেন।

আমাদের করণীয় কি?

যেহেতু রাইনোভাইরাসের মিউটেশন অনেক বেশি, তাই এখন পর্যন্ত রাইনোভাইরাসের প্রতিরোধ বা নিরাময়ের জন্য কোন কার্যকরী ভ্যাকসিন, চিকিত্সা বা ওষুধ আবিষ্কার হয় নাই (করা যায় নাই)। তাই ডিকনজেস্ট্যান্ট, কাশির ঔষধ এবং অ্যান্টিহিস্টামাইন উপসর্গগুলো দূর করতে সাহায্য করতে পারে। বিশ্রাম, তরল এবং ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার আপনার সুস্থতায় সহায়ক হতে পারে।

ঘন ঘন হাত ধুয়ে এবং কাশি ও হাঁচি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলে অন্যদের সংক্রামিত করা রোধ করা যাবে।

কত দিন স্থায়ী হতে পারে?

সংক্রমণ কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যদি লক্ষণগুলি তীব্র হয় বা নতুন কোন উপসর্গ দেখা দেয়।

ফ্লু

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা নাক, গলা এবং ফুসফুস সহ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণকে ফ্লু বলা হয়ে থাকে। ইহা অত্যন্ত সংক্রামক এবং অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময় সংক্রমণের হার অনেক বেশি।

আপনি কিভাবে সংক্রামিত হয়েছেন?

হাঁচি বা কাশি থেকে বের হওয়া ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বাহিত বাতাসে ভেসে বেরোনো ছোট ছোট কণা শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করে বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা দূষিত কোন বস্তু স্পর্শ করে ফ্লু দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন।

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মিউটেশন ও অনেক বেশি তাই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন প্রতি বছর আপডেট হওয়া সত্ত্বেও কখনই পুরোপুরি কার্যকর হয় না।

ফ্লু এর উপসর্গগুলি হল: ক্লান্তি বোধ করা, জ্বর, শরীরে ব্যথা অনুভব করা, হাঁচি ও কাশি, গলা ব্যাথা, মাথাব্যথা। অনেক সময় বমি বা ডায়রিয়াও হতে পারে।

আমাদের করণীয় কি?

পর্যাপ্ত বিশ্রাম, তরল, স্বাস্থ্যকর এবং ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা।

অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ যেমন ওসেলটামিভির (oseltamivir) বা ঝানামিভির (zanamivir) ফ্লুর চিকিত্সায় ব্যাবহার করা হয়। কিন্ত অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ গ্রহণ করা যাবে না।

কতদিন স্থায়ী হতে পারে?

জ্বর এবং ব্যথা তিন থেকে পাঁচ দিনে ভাল হয়ে যেতে পারে। কাশি এবং ক্লান্তি দূর হতে একটু বেশি সময়, যেমন দুই সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে।

অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যদি লক্ষণগুলি তীব্র হয় বা নতুন কোন উপসর্গ দেখা দেয়।

বি. দ্র: যেহেতু উপরে উল্লেখিত সংক্রমণ গুলো ভাইরাস দ্বারা সংঘটিত হয়, তাই এন্টিবায়োটিক ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকুন! মনে রাখবেন এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স একটি নীরব ঘাতক, এন্টিবায়োটিকের অপব্যাবহার এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের অন্যতম প্রধান কারণ।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service

    PROS

    +
    Add Field

    CONS

    +
    Add Field
    Choose Image
    Choose Video