ভয়েস অব সুইডেন : খুব সম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘ছাত্ররা বলেছে, আমরা রিসেট বাটন পুশ করেছি। এভরিথিং ইজ গন। অতীত নিশ্চিতভাবে চলে গেছে। এখন নতুন ভঙ্গিতে আমরা গড়ে তুলব। দেশের মানুষও তা চায়। নতুন ভঙ্গিতে চলার জন্য যেটা আছে, সেটা আমাদের সংস্কার করতে হবে।’
ড. ইউনূসের এই মন্তব্যের জেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘তরুণরা রিসেট বাটন টিপেছে, তরুণরাই নতুন বাংলাদেশ গড়বে’। এখন প্রশ্ন হলো, তরুণদের মধ্যে কারা রিসেট বাটন টিপেছে? তরুণদের মধ্যে নানা ভাগ আছে, কোন তরুণরা নতুন বাংলাদেশ গড়বে?
তরুণদের মধ্যে আছে- ১. জিহাদি, শিবির, ধর্মান্ধ, ইসলামী মৌলবাদী, নারীবিদ্বেষী, হিন্দুবিদ্বেষী, খ্রিস্টান বিদ্বেষী, বৌদ্ধ বিদ্বেষী, আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী। ২. মুক্তচিন্তায়, বাকস্বাধীনতায়, ধর্মনিরেপেক্ষতায়, আধুনিকতায় বিশ্বাসী (আওয়ামী লীগের চুরি ডাকাতি দুর্নীতি বিরোধী)। ৩ .আওয়ামী লীগ সমর্থক, হাসিনা সমর্থক। ৪. বহুদলীয় গণতন্ত্র সমর্থক। ১ নম্বর দলটি ইউনূস সাহেবকে ঘিরে আছে, যাদের প্রশংসায় ইউনূস সাহেব পঞ্চমুখ। তাদেরই কি তিনি দায়িত্ব দিতে চান নতুন বাংলাদেশ গড়ার? ইয়েস অর নো?
চলচ্চিত্র সমালোচক, লেখক ও সাংবাদিক বিধান রিবেরু লেখেন, রিসেট বাটন যেমন আছে, তেমনি রিবুট বাটনও আছে। এগুলো কম্পিউটার প্রযুক্তির কথা। রাজনীতি ও ইতিহাসে রিসেট আর রিবুট বলে কোনো কথা হয় না। রাজনীতিতে ইতিহাস সচেতনতার সাথে প্রজ্ঞার দরকার হয়। যাই হোক, ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো, আমরা ইতিহাস থেকে কিছু শিখি না।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক হাসান মোরশেদ লিখেছেন, একটি জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার প্রথম ধাপ হলো তার স্মৃতি মুছে ফেলা। তার বই, সংস্কৃতি, ইতিহাস সব বিস্মৃত করে দেয়া। তারপর নতুন বই লেখা হবে, নতুন সংস্কৃতি গড়ে তোলা হবে, নতুন ইতিহাস উদ্ভাবন করা হবে। এর মধ্যেই ওই জনগোষ্ঠী ভুলে যাবে- সে কী, সে কী ছিলো আদতে। চারপাশের পৃথিবীও তাকে ভুলে যাবে আরো দ্রুত (মিলান কুন্ডেরা। দ্য বুক অফ লাফটার এন্ড ফরগেটিং)। রিসেট বাটনের মূল সূত্র।
Leave feedback about this