আজিজুর রহমান আসাদ : সম্প্রতি বাংলাদেশের রেজিমচেঞ্জের মূল কৌশলবিদ কারা এবং এদের মগজে কী আছে, আপনি কি তা জানেন? ‘রেজিমচেঞ্জ’ সফট পাওয়ার যেমন প্রোপাগান্ডা, জ্ঞানের ক্ষমতা, মগজ ধোলাই, ইত্যাদি দিয়ে হতে পারে যার নাম দেয়া হয় “গণ অভ্যুথান”। অথবা হার্ড পাওয়ার যেমন পুলিশ হত্যা, থানা জ্বালিয়ে দেয়া, স্থাপনা জ্বালিয়ে দেয়া, ইত্যাদি দিয়েও হতে পারে। কিংবা মিশ্রকৌশল হতে পারে, ছলনা, প্রতারণা, মিথ্যাচার, প্রোপাগান্ডা, গোপন হত্যা, প্রকাশ্য হত্যা, অগ্নিসংযোগ – সব কৌশল একসাথে।
রাজনীতি ও সহিংসতা (যুদ্ধ) নিয়ে মাও সে তুং এর একটি মন্তব্য আছে, “যুদ্ধ হচ্ছে রক্তপাতময় রাজনীতি আর রাজনীতি হচ্ছে রক্তপাতহীন যুদ্ধ”।
‘রেজিমচেঞ্জ’ একটি রাজনীতি যা অনেক দুরে বসে মেটিকুলাসলি প্লান করে করা হয়, অনেক প্রস্ততি নেয়া হয়। বিশ্বায়নের যুগে এটির চরিত্র আন্তর্জাতিক। দেশি ও বিদেশি অনেক ধরনের শক্তিকে সমাবেশিত করতে হয়। গেম প্লান লাগে, রেজিমচেঞ্জ করা ও তারপর সেটাকে সংহত করার জন্য। এটির আরেকটি নাম “ডিজিটাল ওয়ার”। এই যুদ্ধের চরিত্র অনেকটা গেরিলা যুদ্ধের মত, পার্থক্য হচ্ছে, এখানে ফুট সোলজারেরা থাকে প্রকাশ্যে, এবং মুল স্ট্রাটেজিক প্লানাররা থাকে আড়ালে, কেউ তাঁদের চিনতে পারেনা।
শত্রুকে চেনা নিয়ে, বিখ্যাত চিনা সমরবীদ সান স্যু (The Art of War) একটি কথা আছেঃ “আপনি যদি শত্রুকে জানেন এবং নিজেকে জানেন তবে আপনার একশত যুদ্ধের ফলাফলকে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। আপনি যদি নিজেকে চেনেন তবে শত্রুকে না জানেন তবে প্রতিটি জয়ের পরে আপনিও পরাজয় ভোগ করবেন। আপনি যদি শত্রু বা নিজেকে না জানেন তবে আপনি প্রতিটি যুদ্ধে পরাজিত হবেন।”
বাংলাদেশী প্রবাসীদের বলবো, নিজের মগজ কাজে লাগান। আপনারা নিজেরাও কি জানেন কিভাবে আপনারা প্রবাসে নিরাপদ অবস্থানে থেকে বাংলাদেশের মানুষকে ‘রক্তপাতময় রাজনীতির’ দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, রেজিমচেঞ্জের অদৃশ্য কৌশলবিদদের অসচেতন গুটি হিসেবে। জনগণের শত্রুকে জানুন, এবং নিজেকে জানুন। (Know Thyself অনেকেই জানেন, তবে Metacognition জানা দরকার। Metacognition মানে নিজের মগজে কি আছে, এবং অন্যের মগজে কি আছে, দুটোই জানা)। লেখক: গবেষক। ফেসবুক থেকে