জানুয়ারি ২১, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
মতামত

পাপ বাপেরেও ছাড়ে না!

কাজী তাহসিন আহমেদ : পাপ বাপেরেও ছাড়ে না। দুই মাস আগেও ‘দাদা খেয়ে এসচেন না খাবেন’/ একটা ইলিশ মাছ ১৬ পিস করে কাটুন দাদা’ নিয়ে ট্রল করা হতো। আর এখন ১৬০টাকা দিয়ে ১০ পিস মাংসের টুকরা থেকে শুরু করে ১০০ টাকায় মাছের শুধু মাথা আর লেজ কেনার প্যাকেজ চালু হয়েছে। পুরো ঢাকা শহর ভর্তি অদক্ষ চাকরিজীবি। বারো মাস পর পর দুই আনা ইনক্রিমেন্ট, অথচ ষোল আনা মুদ্রাস্ফীতি। সুতরাং কেরানীদের এই শহরে লাইফস্টাইল দিন দিন পেছাবে। আসলে যুগ যুগ ধরেই স্লোলি পিছিয়েছে, সেটা এখন দিনকে দিন প্রকটভাবে চোখে ধরা পড়বে।

যেমন একশ বছর আগে কেরানীভিত্তিক যে কলকাতা শুরু হয়েছিলো – কালচার আছে, ভাব আছে, শিক্ষা আছে কিন্তু বেতন ছাড়া আর কোন পয়সা নেই, হিসেব করে চলা (কিপটামি) ছাড়া গতি নেই – ধীরে ধীরে ঢাকাও সেই শহরে পরিনত হবে। ত্রিশ বছর আগেও গ্রামের সবচেয়ে গরীব ঘরেও হুটহাট মেহমান এলে উঠানে হেঁটে বেড়ানো যেকোন একটা রাতা মোরগ জবাই করা হতো। সাথে পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের ডাব, তাল, খেজুরের রস, চালের পিঠা। জিরো কস্টিং এ মেহমানদারী।

৯০’স এ কাজের বুয়ারাও নিয়মিত স্বর্নের গয়না কিনতো। সবচেয়ে গরীব কেরানীটাও শহরের শেষ সীমায় চার কাঠা জমি কিনে ফেলতো। আর এখন এক টুকরা জমিতে ৩৬ টা ফ্ল্যাট, দুপুরে দুই ঘন্টা লিফট অফ, দুই বাড়ির মাঝখানে আর স্যাতস্যাতে সিড়িতে স্তুপ করা ময়লা। ডেংগু।
এভারেজ বিদ্যা আর সস্তা চাকরী করে আলগা ভাব দানো’র দিন শেষ।

বরং এখন সবকিছু গ্রাফ অনুযায়ী এগোলে খুব বেশী দেরী নেই যে ইট পাথরের এই শহরে, কোন খাঁচা সদৃশ ফ্লাটে গেস্ট চলে আসলে ‘ভাইয়া বসেন স্বপ্ন থেকে ২০০ গ্রাম গরুর মাংস আনছি পুরোটাই খাবেন কিন্তু’ – ধীরে ধীরে স্বাভাবিকভাবে চালু হয়ে যাবে। নতুন প্রজন্ম নিজেদের মতো জীবন শুরু করবে, ১৮ বছর পেরোলেই লিভ টুগেদার শুরু করবে, পার্ট টাইম জব, সুগার ড্যাডি, সুগার মাম্মী, বসের সাথে ট্রিপ – সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ধর্ম কমবে, রবীন্দ্রনাথ বাড়বে। গংগার দুই পার একসাথে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে। ফেসবুক থেকে