জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
বাংলাদেশ মতামত

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের শঙ্কা প্রসঙ্গে

মাসুদ রানা : এ্যামেরিকার বিদায়ী-প্রেসিডেণ্ট জৌ বাইডেন যদি উক্রাইনকে অনুমোদন দিয়ে থাকেন দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরে আঘাত করার, তা তিনি নব-নির্বাচিত প্রেসিডেণ্ট ডৌনাল্ড ট্রাম্পের ইতিবাচক ইঙ্গিত ছাড়া করেছেন বলে আমি মনে করি না।
যাহোক, মার্কিন সশস্ত্র অনুমোদনপ্রাপ্ত উক্রাইনের এই ক্ষমতা ও এর প্রয়োগ দেশটির সাথে রাশিয়ার যুদ্ধে এ্যামেরিকা তথা ন্যাটোর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ হিসাবে গণ্য করবে রাশিয়ার প্রেসিডেণ্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ইতোমধ্যে রাশিয়া তার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ডক্ট্রিন হালনাগাদ করেছে পরিবর্তিত বিশ্ব-পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রেখে। অর্থাৎ, রাশিয়া যদি ন্যাটোর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে উক্রাইনের দ্বারা অস্তিত্বের হুমকি প্রত্যক্ষণ করে, বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে পুনরায় ইউরোপে।
বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশ কী করবে? এ-বিষয়ে আমি সতর্কতামূলক লেখা লিখে আসছি প্রায় দেড় দশক ধরে।
সন্দেহ নেই, বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশে এর অভিঘাত পড়বে সাংঘাতিকভাবে। আমার কাছে সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বিভক্তি। পাকিস্তান থেকে যদি চেক-বিহীন জাহাজ ভিড়ে থাকে চট্টগ্রামে, সে-জাহাজের কার্গোতে কোনো বেসরকারী অস্ত্রপাতি আছে বা নেই, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা যে বিপ্লব-বিপ্লব বুলি শুনছি ইসলামিক জিহাদী বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার থেকে শুরু করে অসাংবিধানিক-অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তর্গত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মুখে, তাতে একটি গৃহযুদ্ধের অন্ততঃ এক-পাক্ষিক প্রস্তুতি চলছে বলে ধারণা করা যেতে পারে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খোলাখুলিভাবে ১৯৭১ সালের সৃষ্ট বাঙালী জাতিরাষ্ট্রের সংবিধান তথা এর সৃষ্টির প্রতি বিরোপভাবাপন্ন ক্যাম্প-‘৪৭ ভুক্ত হলেও, বাংলাদেশের জনগণ ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে যুদ্ধে-প্রতিষ্ঠিত বাঙালী জাতিরাষ্ট্রের বিলোপ ঘটিয়ে পাকিস্তান-প্রকারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা মেন নেবে বলে মনে হয় না।

সুতরাং, জিহাদের সশস্ত্র প্রচেষ্টা হলে, পুনরায় মুক্তিবাহিনী সংগঠিত হবে, এবং দেশ-জাতি-রাজনীতি একটি গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।
বাংলাদেশ বর্তমানে যে-সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে, তা হচ্ছে এর অস্তিত্বের সঙ্কট, যা ইতিপূর্বে আমরা কখনো প্রত্যক্ষ করিনি।
১৮/১১/২০২৪। লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড। ফেসবুক থেকে