ডিসেম্বর ৫, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
বিশ্ব

বাংলাদেশী ক্রেতা নেই, তাই মুখ থুবড়ে  পড়েছে কলকাতার পূজার বাজার।

এক সময় পূজার আগে কলকাতার বাজার মানেই হাঁটার জায়গাও নেই। গড়িয়াহাট থেকে হাতিবাগান, নিউমার্কেট থেকে শ্যামবাজার—সব জায়গা থাকত চিলেকোঠা অবধি ভরা। সেই পরিচিত ছবি এ বছর যেন উধাও। বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেনাকাটার দিন, পূজার আগের শেষ মুহূর্তেও কার্যত খাঁ খাঁ করছে কলকাতার দোকানপাট।

করোনাপরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা থাকলেও এ বছর বড় ধাক্কা খেলেন ব্যবসায়ীরা। তাদের ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়ার অন্যতম কারণ বাংলাদেশের ক্রেতাদের অনুপস্থিতি। সঙ্গে আন্দোলন, টানা বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতার মতো কারণও যুক্ত হয়েছে। 

কলকাতার উৎসব বাণিজ্যে বাংলাদেশের পর্যটক ও ক্রেতারা দীর্ঘদিন ধরেই এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। প্রতি বছর পূজার আগের এই সময়টায় হাজার হাজার মানুষ ভিসা নিয়ে কলকাতায় যেতেন কেনাকাটা করতে। বিশেষ করে জামা-কাপড়, শাড়ি, জুয়েলারি, প্রসাধনী, ব্যাগ, জুতা, কসমেটিকস—এসব পণ্য প্রচুর বিক্রি হতো। কিন্তু এবার সীমান্তে কড়াকড়ি, ভিসা সমস্যাসহ নানা কারণে তাদের অনেকেই কলকাতায় যেতে পারেননি। ফলে এখানকার বহু ব্যবসায়ী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

হাতিবাগান মার্কেটের এক দোকানদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের আক্ষেপের কথা। জামা কাপড় দোকানি সন্ন্যাসী মণ্ডল মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বলেন ‘সকাল আটটা থেকে দোকান খুলেছি, এখনো পর্যন্ত একজন ক্রেতাও আসেননি। প্রতি বছর এই সময় বাংলাদেশ থেকে বহু পরিবার আসত। তারা একসঙ্গে পাঁচ-দশটা জামা কাপড় কিনত। এবার একজনকেও দেখলাম না।’

একই কথা শোনা গেল গড়িয়াহাটের ব্যাগ বিক্রেতা অভিজিৎ দত্তের মুখেও। তিনি বলেন, ‘আগের বছর এই সময় বিক্রি করতে করতে সময় পেতাম না, এবছর সকাল থেকে এক টাকাও বিক্রি হয়নি।’

শুধু পোশাক নয়, অলঙ্কার ব্যবসায়ও একই চিত্র। জানা গেছে, আগের বছর খানিকটা বিক্রি হয়েছিল, এবারে সেটাও নেই।

গড়িয়াহাটের জামাকাপড় বিক্রেতা সমর ঘোষ বলেন, ‘বাংলাদেশিরা আসতেন বলেই এত মাল আনতাম। এবার সব গুদামেই পড়ে থাকবে মনে হচ্ছে। ট্রেন চলছে না, সীমান্ত দিয়ে অনেকেই ঢুকতে পারছেন না। ভিসা পেতে সমস্যা হচ্ছে বলেও শুনছি। তাই তারা আসেনি। আর তারা না এলে এই বাজার আর চলে না।’