সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত স্থানীয় শিক্ষকরা।
সোমবার সকাল থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক অবরোধ করে ক্যাম্পে যেতে দেওয়া হচ্ছে না দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থার কর্মরতদের।
চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের দাবি, প্রশাসন আশ্বাস দিয়েও কোনো ধরনের সমাধান না হওয়ায় দাবি আদায়ে ফের আন্দোলনে নেমেছেন তারা৷ এছাড়া স্থানীয়দের চাকরি থেকে বাদ দিলেও দিব্যি চাকরি চালিয়ে যাচ্ছেন রোহিঙ্গারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৭টায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের কোটবাজার এলাকায় ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে যান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি হারানো স্থানীয় শিক্ষকরা। সড়ক অবরোধ করে দিতে থাকেন স্লোগান। আর আটকে দেওয়া হয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
চাকরিচ্যুত স্থানীয় শিক্ষকদের দাবি, অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে তালবাহানা করছে এনজিওগুলো। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েও কোনো সুরাহা না হওয়ায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন তারা। এদিকে সড়ক অবরোধের কারণে রাস্তার দু’পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। সড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুধু গাড়ি আর গাড়ি। যানজটে আটকা পড়ে অনেক যাত্রী পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন গন্তব্যে। তবে তীব্র গরমে যাত্রী কিংবা চালক সবাই পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
এর আগেও একবার সড়ক অবরোধ করেছিলেন শিক্ষকরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার আবারও অবরোধ শুরু করে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, বিনা কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত স্থানীয় ১ হাজার ২৫০ শিক্ষককে ছাঁটাই করা হয়। পরে তারা চাকরিতে পুনর্বহাল দাবিতে আন্দোলনে নামে।
অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা প্রকল্পে কর্মরত স্থানীয় প্রায় ১২’শ বাংলাদেশি শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, বেতন বৃদ্ধির দাবি তোলায় তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তবে রোহিঙ্গা শিক্ষকরা এখনও দায়িত্বে বহাল আছেন।
উখিয়া থানার ওসি মো. আরিফ হোসাইন জানান, আন্দোলনরত শিক্ষকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা চলছে। সড়ক অবরোধের কারণে মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যারীন তাসনিম তাসিন বলেন, ইউনিসেফের অর্থায়নে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এনজিও আশ্রয় শিবিরে শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। কিন্তু অর্থসংকটের কারণে শিক্ষা প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি ইউনিসেফ চিঠি দিয়ে সরকারকে জানিয়েছে। গত ৩০শে জুন পর্যন্ত প্রকল্প চালানোর অর্থ তাদের রয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে কিছু শিক্ষক চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে চাকরিচ্যুত শিক্ষকেরা আন্দোলনে নেমেছেন।