মে ১৭, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
বাংলাদেশ

ঢাকা উত্তরের প্রশাসক এজাজ নিষিদ্ধ হিযবুতের সদস্য, দাবি জুলকারনাইনের

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছেন প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান। তিনি অভিযোগ করেছেন, মোহাম্মদ এজাজ নিষিদ্ধঘোষিত হিযবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতাদের একজন। ২০০২ সাল থেকে হিজবুত তাহরীরের সঙ্গে জড়িত হন। এ সংগঠনের কাজ করতে গিয়ে দু’বার গ্রেপ্তারও হন তিনি। তবে এজাজ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

শুক্রবার (১৬ মে) সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মোহাম্মদ এজাজ সম্পর্কে একটি পোস্ট করেন। তিনি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অভ্যন্তরে যেন আরেকটি ছায়া সরকার পরিচালিত হচ্ছে, যার অগ্রভাগে রয়েছে অন্তত ৬ জন ব্যক্তি, বেশ সুকৌশলে তারা সরকারের ভেতর প্রবেশ করেছেন। যে-সব উপদেষ্টা বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামে আপনারা হরহামেশাই মুখরোচক গল্প শুনে অভ্যস্ত তারা কেউই এসবের সাথে সংশ্লিষ্ট নেই। বরং আপনাদের কাছে ওইসব ছাইপাঁশ গল্প প্রচারই করা হয় সংশ্লিষ্টতা নেই এমন সব ব্যক্তিদের সামনে এনে বিতর্কিত করে আপনাদের ব্যস্ত রাখার জন্যে। উদ্দেশ‍্য ১৪ জনের বিশেষ দলটি বা ছোটন গ‍্যাং যেন নিভৃতে তাদের কুৎসিত উদ্দেশ‍্য সফল করতে পারে।’

জুলকারনাইন আরও লিখেছেন, ‘আজকে উন্মোচন করা হবে ছোটন গ্যাং এর অন‍্যতম সদস‍্য এবং সরকারের ভেতর চতুরতার সাথে স্থান করে নেয়া ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের পরিচয়।’

এ পর্যায়ে স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, মোহাম্মদ এজাজ নিষিদ্ধঘোষিত হিযবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতাদের একজন। তিনি ছাত্র জীবনে ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সাথেও যুক্ত ছিলেন। পরে ২০০২ সাল থেকে হিযবুত তাহরীরের সাথে জড়িত হন। এ সংগঠনের কাজ করতে গিয়ে কমপক্ষে দু’বার গ্রেফতার হন তিনি।’

সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের স্মারক ও গ্রেপ্তারের তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ইস‍্যু করা সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের একটি স্মারক পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশ নামক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের তালিকায় এই মোহাম্মদ এজাজের অবস্থান ছিল পঞ্চম। একই বছর নিষিদ্ধ এই সংগঠনটির প্রচারণা ও অর্থায়নের অভিযোগে মোহাম্মদ এজাজসহ আরো আটজ বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(১)(ক)(৩)/২৫/ঘ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় কিছুদিন আটক থাকার পর জামিনে বেরিয়ে আবারও একই নিষিদ্ধ সংগঠনের সাথে তৎপর থাকেন এজাজ।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘৫ আগস্ট ২০২৪ এর পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ১০ নভেম্বর ২০২৪ এজাজসহ তার অন‍্য সহযোগীদের মামলা থেকে খালাস প্রদান করা হয়। মোহাম্মদ এজাজ নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকা থেকে বের করতে বিভিন্নভাবে দেনদরবার করা শুরু করেন।’

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে তাকে সুপারিশ করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তা জানিয়ে জুলকারনাইন আরও লিখেছেন, ‘ছোটন গ‍্যাংয়ের সাথে আগে থেকেই পরিচয় থাকার সুবাদে এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সরাসরি সুপারিশে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে আবির্ভূত হন মোহাম্মদ এজাজ। জানা যায়, এ পদের জন্যে পর্দার আড়ালে থেকে তদবির করেন একজন নারী উপদেষ্টা।’

জুলকারনাইন আরও লিখেছেন, ‘বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার সাথে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া গেছে সরকার পক্ষ থেকে মোহাম্মদ এজাজকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগের আগে কোন রকমের নিরাপত্তা ছাড়পত্র গ্রহণ করা হয়নি।’