মে ১৩, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
অর্থনীতি

মধ্যরাতে বিলুপ্ত এনবিআর, ক্ষুব্ধ কাস্টমস ও ট্যাক্স কর্মকর্তারা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব খাতকে দুটি পৃথক বিভাগে ভাগ করেছে সরকার। সোমবার (১২ মে) রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।

নতুন এই অধ্যাদেশ জারির ফলে দীর্ঘদিনের রাজস্ব সংস্থা এনবিআরের অস্তিত্ব এখন আর নেই। রাজস্ব খাত এখন থেকে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ — এই দুই ভাগে পরিচালিত হবে।

তবে এনবিআরের আওতায় থাকা কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা এতে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনার স্বাধীনতা নিশ্চিত না করে বরং এনবিআরের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রশাসন ক্যাডারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাদেশের খসড়া পর্যায় থেকেই কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সরকার তাঁদের মতামত উপেক্ষা করেই প্রায় অপরিবর্তিত খসড়ার ভিত্তিতে চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করেছে। কেবল রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নতুন কাঠামোয় রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে প্রশাসন ক্যাডারের পাশাপাশি আয়কর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাজ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে রাজস্ব ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এসব পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্তৃত্বই বেশি থাকবে।

এদিকে অধ্যাদেশের প্রতিবাদে এনবিআরের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার (১৩ মে) বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের ভাষ্য, কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের মতামত উপেক্ষা করে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

একজন এনবিআর কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের দুইটি অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা মঙ্গলবার বৈঠকে বসবেন এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।’

তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিন ধরে তাঁরা অর্থ উপদেষ্টাসহ নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলেও কোনো কার্যকর সমাধান মেলেনি। এতে রাজস্ব ক্যাডারের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে এবং চলতি অর্থবছরের বাকি সময়ে রাজস্ব সংগ্রহ ব্যাহত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অধ্যাদেশ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ কর আইন প্রয়োগ ও কর আদায়ের অবস্থা পর্যালোচনা করবে। আর রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন, যেখানে অধিকাংশ পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি থাকবে।