বিভিন্ন দেশের মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করা চিকিৎসকদের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধনযোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক ঘণ্টা ৪০ মিনিটের পরীক্ষায় ৪১৮ জন চিকিৎসক অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১১৫ জন।
শুক্রবার (৯ মে) সকাল ৯টায় মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জন্সে (বিসিপিএস) এই পরীক্ষা শুরু হয়। বিকেলে ফলাফল প্রকাশ করেন বিএমডিসির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. লিয়াকত হোসেন।
এর আগে গত ১৩ মার্চ অনলাইনে বিএমডিসি নিবন্ধনযোগ্যতা যাচাই পরীক্ষার আবেদন শুরু হয়। শেষ হয় ১২ এপ্রিল। এরপর ৬ মে পর্যন্ত চলে আবেদন ফি জমাদান।
বিএমডিসির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. লিয়াকত হোসেন জানান, পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ৪৩০ জন রেজিস্ট্রেশন করেন। এর মধ্যে ১২ জন অনুপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ১১৫ জন।
তিনি বলেন, বিদেশে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করলেও দেশে সরাসরি চিকিৎসা পেশায় প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয় না। এক্ষেত্রে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন হয়। এটি নিতে হলে রেজিস্ট্রেশন কোয়ালিফাইং এক্সামিনেশন (নিবন্ধনযোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা) পাস করতে হয়। এরপর এক বছরের ইন্টার্নি শেষে দেওয়া হয় রেজিস্ট্রেশন।
বিএমডিসির রেজিস্ট্রার বলেন, রেজিস্ট্রেশন গ্রহণের পরই এসব চিকিৎসক প্র্যাক্টিস এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশন করার সুযোগ পান। কেননা পোস্ট-গ্রাজুয়েশনে ভর্তি হতে গেলেও বিএমডিসির লাইসেন্সিং সার্টিফিকেট বা রেজিস্ট্রেশন লাগবে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে বিদেশে মেডিকেল পড়তে গেলে বিএমডিসির ‘এলিজিবিলিটি সার্টিফিকেট’ নেওয়ার নিয়ম করা হয়। দেশের বাইরে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরা পাস করে আসার পরে আমরা পুনরায় যাচাই করে দেখি।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা এলিজিবিলিটি সার্টিফিকেট না নিয়েই সরাসরি ভর্তি হয়ে যান। ফলে দেশের বাইরে নামি-দামি মেডিকেলে এমবিবিএস করলেও দেশে চিকিৎসাসেবায় যুক্ত হতে পারছিলেন না অনেক চিকিৎসক। পরবর্তীতে তাদের জন্য কয়েকটি শর্তে নিবন্ধনযোগ্যতা যাচাই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেয় বিএমডিসি—জানান প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. লিয়াকত হোসেন।
বিএমডিসি সূত্রে জানা গেছে, ‘এলিজিবিলিটি সার্টিফিকেট’ গ্রহণ না করা চিকিৎসকদের এ বছর ছয়টি শর্তে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এগুলো হলো—বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া, এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সর্বমোট জিপিএ ৮ পয়েন্ট হওয়া, এসব পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে ন্যূনতম গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫ থাকা, এইচএসসি পরবর্তী এমবিবিএস ভর্তির ক্ষেত্রে সেশন গ্যাপ তিন বছরের অধিক না হওয়া, বিদেশি শিক্ষা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে মার্কশিট বাংলাদেশে প্রচলিত জিপিএতে রূপান্তর করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে একুইভ্যালেন্স সার্টিফিকেট গ্রহণ করা এবং কোর্স চলাকালীন শিক্ষা বদলের ক্ষেত্রে অনাপত্তিপত্র থাকা।
জানা গেছে, ১০০ মার্কের নিবন্ধনযোগ্যতা যাচাই পরীক্ষায় নৈর্ব্যক্তিক পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র সাজানো হয়। ১০০ নম্বরের এই পরীক্ষায় সঠিক উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর দেওয়া হয়। আর প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য অর্জিত নম্বর থেকে ০.০৬ নম্বর কাটা হয়।
প্রতি বছর মে এবং অক্টোবরে দুইবার নিবন্ধনযোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অনুত্তীর্ণ চিকিৎসকরা পুনরায় পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান।