নাদিম মাহমুদ : জুলাই-আগস্টে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের নাম ও নিহতের স্থান নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় একটি তালিকা ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এইসব নিহত শহীদদের ঠিক কতজনকে ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল, সেইসব প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ কি বলা হয়েছে, শরীর থেকে বুলেট বের করা গিয়েছিল কি না, এইসব বুলেটগুলো কোন আইনশৃঙ্খলা বা সন্ত্রাসীদের ছিল তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন বিস্তারিত প্রতিবেদন কেউই প্রকাশ করেননি। এমনকি কোন গণমাধ্যমও এই ভালো স্টোরিটা নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি। আমরা তো কোন হত্যাকাণ্ড ঘটলেই তো ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেখি, মৃত্যু কত ঘণ্টা আগে ঘটেছিল, কোন অর্গান ড্রামেজ হয়েছিল তা নিয়ে তো নিয়মিত প্রতিবেদন করি। তাহলে এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন গণমাধ্যম প্রতিবেদন করার সাহস দেখাল না কেন? এটি একটি ঐতিহাসিক দাললিক প্রতিবেদন হতে পারত।
নিহতদের কেবল তালিকা, মৃত্যুর কারণ আর মৃত্যুর স্থানই ইতিহাস নয়। বরং এই গুলিগুলো লাইভ ছিল কি না, রাবার বুলেট ছিল সেটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। ময়নাতদন্তে যদি ১০০ জনের শরীর থেকেও বুলেট উদ্ধার করা যায়, তাহলে সেটা নিয়ে বিশ্লেষণ করা জরুরি। কারণ, নিহত যারা হয়েছেন, তারা সবাই কি পুলিশ-র্যাবের গুলিতে নিহত হয়েছিল নাকি সন্ত্রাসীদের গুলিতেও নিহত হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমরা ওইসময়ে পত্র-পত্রিকায় সরকারপন্থিদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখেছি। আবার কিছু কিছু ভিডিওতে অস্বাভাবিকভাবে যুবকদের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছি, যেখানে না ছিল পুলিশ না ছিল র্যাব। এই লাশগুলো নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং নিরপেক্ষ আন্তজার্তিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো একটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে পারে। এমনকি সরকারের উচিত স্বচ্ছতার জন্য তা জাতির সামনে তুলে ধরতে পারে। যদিও এর আগে এক উপদেষ্টা ৭.৬২ বলার পর পদ খুয়েছেন।
নিহত এই মানুষগুলোকে আমরা ফিরে পাব না, তবে ইতিহাসের অংশ হিসেবে স্বচ্ছতার সাথে তাদের বিষয়ে আমরা নির্মোহ তথ্য আগামীর প্রজন্মের জন্য দেখতে চাই। এটা নিয়ে যেন কেউ রাজনীতি করতে না পারে, সেইজন্যই আমরা বস্তুনিষ্ঠ একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেখতে চাই, যেখানে প্রতিটি লাশের (যেগুলোর হয়েছে) ময়না তদন্তের তথ্য পাবলিকলি ওপেন করা উচিত। ফেসবুক থেকে