জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
বাংলাদেশ মতামত

বাঙালির কাছে ৩২ নম্বর বাড়ির যে গুরুত্ব, ড. ইউনূস আপনি কি তা বুঝতে পারছেন না?

গোলাম মাওলা রনি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যে আবেগ, যে অনুভূতি তা আপনি আন্দাজ করতে পারবেন না, ড. ইউনূস। ওজনও করতে পারবেন না। এ অনেক বড়, অনেক বিশাল। আপনার যারা সহকর্মী আছেন তারাও আন্দাজ করতে পারবেন না। কারণ তারা রাজনীতি করেননি? এমনকি যারা বিএনপি করেন তারাও বঙ্গবন্ধু নিয়ে কোনো কথা বলেন না। কেন তারেক রহমান বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে গিয়েছিলেন, বলুন তো আপনি? কেন জিয়াউর রহমান শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে আসতে দিয়েছিলেন, বলুন তো? কেন শেখ হাসিনা এতো চেষ্টা করেছেন জিয়াউর রহমানের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য, কিন্তু সেটা তিনি পারেননি। সাহস পাননি। কারণ তিনি রাজনীতি করেন। কেননা তিনি জানেন এমনটি করলে সর্বনাশ হয়ে যাবে!

বাঙালির জাতির কাছে, এই বাঙালি জাতিসত্তার নিকট ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির যে গুরুত্ব, আপনি ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন করে জন্ম না নেওয়া পর্যন্ত আপনি এর গুরুত্ব বুঝতে পারবেন না। যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, যারা এদেশকে ভালোবাসেন, তাদের কাছে ওই বাড়িটির গুরুত্ব আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিধন্য বাড়িটিতে যা কিছু হয়েছে, আগামী দিনে-এর প্রতিশোধ কীভাবে হয়, আল্লাহ মাফ করুন; আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। সেই ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়ি নিয়ে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলতে গেলে আপনাকে অবশ্যই মার্জিত, কূটনৈতিক ভাষা ব্যবহার করতে হবে বা করা উচিত। কিন্তু সেটা না করে আপনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে রীতিমতো আগ্নেয়গিরির লাভা তৈরি হয়ে গেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, বিএনপিরও অনেক নেতাকর্মী তাতে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। এমনকি জামায়াতের লোকেরাও বিক্ষুব্ধ হয়েছে। আপনি দেখুন তো, জামায়াতের আমীরকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে একটা গালি দেওয়ান তো। আপনি পারবেন না। দেশের অন্য কোনো নেতাকে দিয়েও বঙ্গবন্ধুকে গালি দেওয়াতে পারবেন না।

বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল ইসলাম ধানমন্ডির ৩২ নম্বর, পনের আগস্ট নিয়ে একটা টু-শব্দও করেনি। আপনি কি তাদের চেয়েও বড় নেতা হয়ে গেলেন? তাদের চেয়েও বড় দেশপ্রেমিক হয়ে গেলেন? জামায়াতের কতো ক্ষতি হয়েছে গত পনের-ষোলো বছরে। কই, তারা তো বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটা বাজে কথা বলেননি। তারা তো এভরিি থংস ইজ বলেননি।

কাজেই বঙ্গবন্ধু, তার স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর বাড়ি, পনের আগস্ট আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে এমনভাবে মিশে আছে, যেখানে টান দিলে লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ে টান লাগে। যেমন পনের আগস্ট নিয়ে কথা বললে আওয়ামী লীগ সমর্থক-শুভাকাক্সক্ষীদের হৃদয়ে টান লাগে, ৭ নভেম্বর নিয়ে কথা বললে বিএনপির লোকদের হৃদয়ে টান লাগে। এই রিদম যারা বুঝতে পারেন তারা সফল হন, যারা বুঝতে পারেন না তারা ব্যর্থ হন। ড. মুহাম্মদ আপনি কি সফল হবেন, নাকি ব্যর্থ হবেন-তা আপনার ওপরই নির্ভর করে। যদি ব্যর্থ হতে চান, বলেন যান; যা মুখে আসে বলে যান। করে যান যা ইচ্ছা তাই। আর যদি সফল হতে চান, তওবা করুন। ভুল স্বীকার করুন। এমন কথা বলুন, যেন আমাদের অন্তর খুশি হয়ে যায়।
পরিচিতি : সাবেক সংসদ সদস্য। ভিডিও কনটেন্ট থেকে শ্রুতিলিখন করা হয়েছে।