ইমতিয়াজ মাহমুদ: নারীদের টিটুয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ স্কটল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়েছ। টিটুয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মেয়েরা নিকট অতীতে খুব ভালো কিছু করতে পারেনি। কবে যে জয় পেয়েছিল সেটাও ভুলে গেছি- ক্রিকেটের রেকর্ড ইত্যাদি খুলে দেখতে হবে। এই ম্যাচেও বাংলাদেশের ব্যাটিঙটা আশানুরূপ হয়নি, বিশ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ১১৯ রান খুব ভালো কিছু নয়। প্রথম ইনিংস শেষে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শোভনা মুশতারি প্রেসের সাথে কথা বলতে গিয়ে বলছিলেন যে ওদের টার্গেট ছিল ১৪০ বা তার চেয়ে একটু বেশী রান করা। কিন্তু তিনি কনফিডেন্ট ছিলেন যে আমাদের বোলাররা ১১৯অ ডিফেন্ড করতে পারবে। করেছেও তাই।
নিগার সুলতানা জ্যোতি ও তাঁর দলের সবাইকে সেলাম। অভিনন্দন মেয়েরা।
বাংলাদেশের মেয়েদেরকে আমি যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে দেখি আমি মুগ্ধ নয়নে আমাদের মেয়েদেরকে দেখি। আমি জানি ভারতীয় বা অস্ট্রেলীয় নারী ক্রিকেটাররা নিজের দেশে যেরকম তারকা খ্যাতি উপভোগ করে, যেরকম অর্থ পায় ক্রিকেট থেকে আমাদের মেয়েরা সেরকমটা পায় না। পুরুষ ক্রিকেটারদের তুলনায় মেয়েরা বোর্ড থেকে যেটুকু টাকা পায় সেটা নিতান্তই তুচ্ছ। টাকার অংকগুলি বললাম না- আপনি চাইলে খোঁজ করে জেনে নিতে পারেন, দেখলে লজ্জা পাবেন। আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের সামর্থ্য আছে নারী ক্রিকেটারদেরকে পুরুষ ক্রিকেটারদের সমান বেতন ফি ইত্যাদি দেওয়ার। ওরা ইচ্ছা করেই দেয়না। তথাপি আমার কাছে লাগে যেন আমাদের মেয়েরা সকলেই একেকজন অনেক বড় বড় তারকা।
কেননা আমাদের মেয়েরা একেকজন একেকটা লড়াকু সৈনিক- বিজয়ী সৈনিক। না, আমি কেবল সেইসব খেলোয়াড়ের কথা বলছি না যারা দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে এই পযন্ত এসেছে। দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে যারা জাতীয় দল পর্যন্ত এসেছেন ওদের গল্প কম বেশী আপনারা সকলেই জানেন। কিন্তু একজন নারীকে তার স্বপ্ন পূরণের জন্যে কেবল দারিদ্র্যের সাথে লড়লেই হয় না। নারীকে লড়তে হয় গোটা সমাজের বিরুদ্ধে, পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে, অবরোধ প্রথার বিরুদ্ধে, নারীবিদ্বেষের বিরুদ্ধে। কেবল দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারের মেয়েরাই নয়- স্বচ্ছল মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েদেরকেও লড়তে হয় এই সবকিছুর বিরুদ্ধে- ভাঙতে হয় ট্যাবু।
আমাদের মেয়েরা যখন মাঠে বিদেশী দলগুলির বিরুদ্ধে খেলতে নামে, আমি কেবল একঝাক ক্রিকেটার দেখি না, আমি দেখি একঝাক বিজয়া। বিজয়া যারা শৃঙ্খল ভেঙেছে নিজের জীবনে কোন না কোন পর্যায়ে। দেখি উজ্জ্বল একদল বিজয়ী বীর- খেলাটা ওদের জন্যে কেবল খেলা মাত্র- জীবনের মুল লড়াইয়ে ওরা তো জীবনে জিতে তবেই খেলতে এসেছে এই পর্যায়ে। আমি দেখতে পাই আমাদের কন্যারা যেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সবচেয়ে উজ্জ্বল বাচ্চারা- মাঠে নেমেছে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে বলে। খেলায় হারলো কি জিতলো সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বটে- আবার অতোটা গুরুত্বপূর্ণও নয়। ওরা তো জয় করেই ফেলেছে বিশ্ব।
আমাদের এই সোনার মেয়েরা ওরা তো জয় করেই ফেলেছে বিশ্ব- একটা বিশ্বকাপ যদি জিতে যায় সে হবে বাড়তি পাওয়া, ওদের মুকুটে আরেকটা পালিক মাত্র। যদি নাও জিততে পারে কিসসু আসে যায় না, তাতে ওদের জন্যে আমাদের ভালোবাসা কোনার ভগ্নাংশ মাত্রও কমবে না। লেখক: আইনজীবী। সূত্র : https://www.facebook.com/imtiaz.mahmood
খেলাধুলা
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নারী ক্রিকেট দলের জয় ও আমাদের একঝাক বিজয়া
- লিখেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক
- অক্টোবর ৪, ২০২৪
- ০ মন্তব্য
- ১ মিনিটের কম সময়
- 234 জন দেখেছে
Leave feedback about this