আগস্ট ১, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
বিশ্ব

৪ বছর পর আজ থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নিলো জান্তা, তবে কি শান্তি ফিরছে মিয়ানমারে?

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখলের পর থেকেই সেখানে চলছে গৃহযুদ্ধ। দেশটির বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ এখন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের হাতে। এরকম অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে ইতিবাচক খবরও পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার দেশটির সামরিক সরকার চলমান ‘জরুরি অবস্থা’ তুলে নিয়েছে।

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে—তবে কি মিয়ানমারের পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসছে?

ডিসেম্বরের নির্বাচন

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার।
ইতোমধ্যে প্রধান বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বর্জনের কথা জানিয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও চলমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগের সমালোচনা করছে।
জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন সাংবাদিকদের ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে জানান, বহু-দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে। এই লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হচ্ছে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। সে সময় নোবেলজয়ী অং সান সুচি’র সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা নেয় তারা। এরপর থেকেই দেশটিতে চলছে গৃহযুদ্ধ। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

জরুরি অবস্থা জারির সময় দেশটির সর্বময় কর্তৃত্ব সামরিক বাহিনী প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি একইসঙ্গে আইন প্রণয়ন, নির্বাহী ও বিচারবিভাগীয় ক্ষমতার অধিকারী হন। তবে সম্প্রতি তিনি সংঘাত নিরসনের পন্থা হিসেবে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি বারবার সামনে নিয়ে আসছেন।
সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়—অভ্যুত্থানের সময় ক্ষমতাচ্যুত নেতা ও অন্যান্য বিরোধী নেতা-কর্মীরা আসন্ন নির্বাচন বানচালের পরিকল্পনা করছে। গত মাসে জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনকে ‘প্রহসনমূলক’ ও সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার চক্রান্তের অংশ হিসেবে আখ্যা দেন।

মার্কিন বিধিনিষেধ প্রত্যাহার

সম্প্রতি, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার ওপর থেকে সব ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে ওয়াশিংটন। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং চলতি মাসের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রশংসাসূচক চিঠি পাঠানোর পর তা তুলে নেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুস। ক্ষমতাসীন জেনারেলের মিত্র ও সামরিক বাহিনী সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার এই সিদ্ধান্তকে তিনি ‘অযৌক্তিক’ হিসেবে উল্লেখ করেন।