হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের চার সদস্য। রোববার (২৫ মে) সকালে সিলেটের চুনারুঘাট থেকে জৈন্তাপুর পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পরিভ্রমণে বের হন তারা।
পরিভ্রমণে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন– ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের সেবা স্তরের রোভার আবদুল আজিজ, মো. মুত্তাকিম ইসলাম মুসা, আকরামুজ্জামান ও মো. রাসেল। এই দীর্ঘ পদযাত্রায় তারা স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, প্রশাসনিক কার্যালয়, ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনা পরিদর্শন করবেন। পাশাপাশি পরিবেশ সচেতনতা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে প্রচারণা চালাবেন সাধারণ মানুষের মধ্যে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস এই পরিভ্রমণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বলেন, রোভার স্কাউটিং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলা, নেতৃত্ব, দেশপ্রেম ও সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করে। এটি শুধু শারীরিক বা বাহ্যিক কার্যক্রম নয়, বরং একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম যা শিক্ষার্থীদের মেধা, মনন ও মানবিক মূল্যবোধের সমন্বিত বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ঢাকা কলেজের রোভার স্কাউটরা ভবিষ্যতের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠছে এবং এ কার্যক্রম তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য শুধু পাঠ্যবইয়ের জ্ঞানে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাস্তব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সে জ্ঞানকে জীবন্ত করে তোলাই এর মূল লক্ষ্য। পরিভ্রমণ কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অন্বেষণের ক্ষেত্রকে সম্প্রসারিত করে, পরিবেশ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বাস্তবধর্মী উপলব্ধি সৃষ্টি করে। এটি শিক্ষার্থীদের কৌতূহল, মননশীলতা এবং বিশ্লেষণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমি বিশ্বাস করি এ ধরনের শিক্ষামূলক ভ্রমণ শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও বাস্তব জীবনের প্রস্তুতিতে এক অনন্য ভূমিকা রাখবে।
ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের সম্পাদক এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার মাহমুদ বলেন, রোভারিংয়ের মূল উদ্দেশ্য একজন শিক্ষার্থীকে শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তব জীবন অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ করা। রোভার স্কাউটদের নিজেদের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়িয়ে নিজেদের সব পরিবেশে কাজ পরিচালনার জন্য শক্তভাবে গড়ে তুলতে পরিভ্রমণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি আরও বলেন, রোভার স্কাউটদের এই সাহসী ও মানবিক যাত্রা শুধু পদযাত্রা নয়, বরং এটি আত্মশুদ্ধির ও সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনের দৃষ্টান্তও।
প্রসঙ্গত, হেঁটে ১৫০ কিলোমিটারের এই যাত্রাকে স্কাউটিংয়ে ‘র্যাম্বলিং’ বা ‘পরিভ্রমণ’ বলা হয়। এ কার্যক্রমের প্রেসিডেন্ট রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড (পিআরএস) অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই অ্যাওয়ার্ড (পিআরএস) পেতে সেবা স্তরের রোভারদের হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার বা নৌকাযোগে ৩০০ কিলোমিটার অথবা সাইকেল যোগে ৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে একটি প্রোগ্রাম সম্পন্ন করতে হয়।