বছরখানেক আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নৃশংসভাবে খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের একটি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে কুষ্টিয়া থেকে। বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে তোলপাড় চলছে।
কুষ্টিয়া শহরের একটি বহুতল ভবনের গ্যারেজে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্যারাডো ব্রান্ডের কালো রংয়ের গাড়িটি রাখা ছিল। প্রায় তিন মাস আগে গাড়িটি গ্যারেজে আনা হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। গাড়িটি নিয়ে সন্দেহ হলে পুলিশ গাড়ির মালিকের সন্ধানে নামে।
সোমবার রাতে যাচাই-বাছাই করে পুলিশ জানতে পারে পুলিশ লাইনের সামনে শাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজে রাখা গাড়িটির মালিক খুন হওয়া আনোয়ারুল আজিম আনারের।
ঘটনাস্থলে থাকা কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বপন ঢাকা মেইলকে বলেন, তল্লাশি চালিয়ে গাড়ির ভেতর থেকে সংসদ সদস্যর স্টিকার ও গাড়ির কাগজপত্র পাওয়া গেছে। কাগজে গাড়িটির মালিক আনোয়ারুল আজিম আনার এমপির নাম রয়েছে। তবে গাড়িটি এখানে কীভাবে এলো তা নিয়ে তদন্ত চলছে। গাড়িটি পুলিশি হেফাজতে নিয়ে রাতে গ্যারেজের প্রহরীকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের হাতে আসা গাড়ির কাগজপত্রে ২০২৩ সালে মডেলের টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়িটির নম্বর ঢাকা মেট্রো-ঘ ১২-৬০৬০। চেসিস নং JTMAA7BJ804035183, ইঞ্জিন নং F-33A0038578 উল্লেখ করা হয়েছে।
সাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজের দায়িত্বে থাকা প্রহরী আলমগীর জানান, প্রায় তিন মাস আগে একটি তামাক কোম্পানির দুই কর্মকর্তা গাড়িটি রেখে যান। তাদের কোম্পানির বায়ারদের জন্য ভবনের দুই, তিন ও চারতলায় পাঁচটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া আছে।
এ বিষয়ে জানতে শাফিনা টাওয়ারের মালিক শামসুদ্দিন আলম ওরফে শাহিনের মোবাইলে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, গাড়িটির তথ্য দেওয়ার জন্য ভবন মালিক সময় নিয়েছেন। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ঝিনাইদাহ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার গত বছরের ১৩ মে কলকাতার অদূরের বরাহনগর থেকে নিখোঁজ হন। ২২ মে কলকাতা সিআইডি দাবি করে, তিনি খুন হয়েছেন। এর কয়েক দিন পর নিউটাউনের এক আবাসিক ভবনের সেপ্টিক ট্যাংক থেকে মাংসপিণ্ড উদ্ধার হয়। আর ভাঙরের বাগজোলা খাল থেকে উদ্ধার হয় কিছু হাড়গোড়। পরপর গ্রেফতার হন বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজন। কলকাতায় মামলার তদন্তদকারী সংস্থা সিআইডি ঘটনার ৭৮ দিনের মাথায় বারাসাত আদালতে পেশ করে চার্জশিট। তবে এর মাঝে তদন্তকারী সংস্থা উদ্ধার হওয়া মাংসপিণ্ডের ফরেনসিক রিপোর্ট তৈরি করে। কিন্তু তা প্রকাশ্যে আনেনি।