মে ১০, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
বাংলাদেশ মানবাধিকার রাজনীতি

কারাগারে ও পুলিশ হেফাজতে আওয়ামী লীগের ২১ নেতাকর্মীর মৃত্যু – তদন্ত ও বিচারের দাবি আওয়ামী লীগের

পুলিশ হেফাজতে আওয়ামী লীগের ২১ জন নেতাকর্মীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ

পুলিশ হেফাজতে আওয়ামী লীগের ২১ জন নেতাকর্মীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ

২০২৪ সালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে প্রফেসর ইউনুস দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারাগারে ও পুলিশ হেফাজতে আওয়ামী লীগের ২১ জন নেতাকর্মীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ তুলেছে আওয়ামী লীগ।

প্রফেসর ইউনূসের মববাহিনীর হাতে প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিরীহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নির্যাতন, লুটপাট, ভাঙচুরের পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে হত্যা ও গুম করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড টেলিগ্রাম চ্যানেলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোঃ আলী আরাফাত এ তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন মিথ্যা ও বানোয়াট মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আওয়ামী লীগের সুস্থ সবল নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতারের পর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে তাদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়। এরপর পরিবারকে অসুস্থতার খবর জানানো হয়। পরিবারের হাজারো দাবির মুখেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোন সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় না। এরকম নির্মম জঘন্য পরিকল্পনার মাধ্যমে এখনো পর্যন্ত ২১ জন নিরপরাধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। যা ১৯৫০ সালের খাপড়া ওয়ার্ড গণহত্যা এবং ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের সমতুল্য বলে মনে করেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

তিনি বলেন যেখানে প্রচলিত আইনে গ্রেফতারকৃত যে কোন নাগরিকের চিকিৎসা সহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব । অথচ পরিকল্পনা করে হত্যা করা ২১ জন আওয়ামী লীগের নিরাপরাধ নেতা কর্মীর ক্ষেত্রে তা প্রতিপালিত হয়নি যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি বলেন এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত সকল দায়িত্বশীল ব্যক্তির শাস্তি নিশ্চিত করাও একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কর্তব্য কিন্তু বাস্তবতা হলো দখলদার ডঃ ইউনুস সরকারের প্রত্যক্ষ পরক্ষণে নির্দেশেই দেশে আওয়ামী লীগ নিধনযোগ্য চলছে। ফলে বিচারের প্রশ্ন এখন অবান্তর। আরাফাত বলেন আমরা বিশ্বাস করি কারাগারের অভ্যন্তরে সংঘটিত এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার একদিন হবেই।

কারাগারে হত্যার শিকার নেতৃবৃন্দের তালিকা।
১। ইলাহি সিকদার(১৯), পিতাঃ মহি সিকদার, গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের ফলসি গ্রামের আওয়ামী লীগ সমর্থক। মৃত্যুর তারিখঃ ৭/৯/২০২৪।
২। শফিকুল ইসলাম (৪৫), পিতাঃ মৃত মালেক উদ্দিন, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা। মৃত্যুর তারিখঃ ১০/৯/২০২৪।
৩। সোহরাব হোসেন আপেল (৩৫), পিতাঃ মৃত রোস্তম আলী, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী ও প্রাইমারি স্কুলের নৈশপ্রহরী। মৃত্যুর তারিখঃ ১০/৯/২০২৪।
৪। আলীমুজ্জামান চৌধুরী (৫৮), পিতাঃ চৌধুরী বাকা মিয়া, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ার বাসিন্দা। মৃত্যুর তারিখঃ ১৪/১০/২০২৪।
৫। শহিদুল ইসলাম রতন (৫৮), বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মৃত্যুর তারিখঃ ১১/১১/২০২৪।
৬। আবদুল লতিফ (৬৭), শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও দলিল লেখক। মৃত্যুর তারিখঃ ২৫/১১/২০২৪।
৭। অধ্যক্ষ শাহাদত আলম ঝুনু (৫৭), বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ। মৃত্যুর তারিখঃ ২৬/১১/২০২৪।
৮। হযরত আলী (৩০), পিতাঃ মোহাম্মদ কুদ্দুস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরউপজেলা যুবলীগ কর্মী। মৃত্যুর তারিখঃ ৬/১২/২০২৪।
৯। আবদুল মতিন মিঠু (৬৫), বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও দুর্গাহাটা ইউনিয়ন পরিষদের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। মৃত্যুর তারিখঃ ৯/১২/২০২৪।
১০। আতাউর রহমান আঙ্গুর (৫৫), সিরাজগঞ্জ পৌর শাখা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। মৃত্যুর তারিখঃ ১০/১২/২০২৪।
১১। নিত্য সরকার (৪৪), পিতাঃ জগদীশ সরকার, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার ২নং গালা ইউনিয়নের কালৈই ওয়ার্ড শাখা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি। মৃত্যুর তারিখঃ ৪/১/২০২৫।
১২। শেখ জহিরুল ইসলাম, পিতাঃ মজিবর রহমান, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক। মৃত্যুর তারিখঃ ১০/১/২০২৫।
১৩। মমিনুর ইসলাম (৫০), পিতাঃ মতিয়ার রহমান, নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মীরগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি। মৃত্যুর তারিখঃ ১৪/১/২০২৫।
১৪। আক্তার শিকদার, খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার ৬নং মধুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মৃত্যুর তারিখঃ ৯/২/২০২৫।
১৫। আব্দুর রাজ্জাক (৫০), পিতাঃ আব্দুর রহমান, ঢাকা জেলার সাভার পৌর শাখা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। মৃত্যুর তারিখঃ ১৩/২/২০২৫।
১৬। সিদ্দিক হোসেন মোল্লা (৪৫), পিতাঃ মৃত মজিবর রহমান মোল্লা, নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার পরানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। মৃত্যুর তারিখঃ ১৮/২/২০২৫।
১৭। জাহিদুল ইসলাম শিপু, টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলাধীন প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। মৃত্যুর তারিখঃ ২৩/২/২০২৫।

১৮। এমদাদুল হক ভুট্টো (৫১), বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার দক্ষিণপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। মৃত্যুর তারিখঃ ১১/৩/২০২৫।
১৯। সুজিত চন্দ্র দে (৪০), পিতাঃ মৃত বদির চন্দ্র দে, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্মী। মৃত্যুর তারিখঃ ২/৪/২০২৫।
২০। রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রাইজুল (৭৪), সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি। মৃত্যুর তারিখঃ ৯/৪/২০২৫।
২১। ফরজাদ হোসেন সজিব, চট্টগ্রাম মহানগরীর ৩৫নং বক্সির হাট ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য। মৃত্যুর তারিখঃ ২৫/৪/২০২৫।