ভওস : বৈশ্বিক রাজনীতির নিয়ন্ত্রক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বমোড়ল। বিশ্বের প্রায় সব জায়গায় তাদের তদারকি বা নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা থাকে। নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করে। বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে তাদের প্রভাব পরিলক্ষিত হয় বেশি। এশিয়ার দেশগুলোতে তাদের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা প্রতিনিয়তই লক্ষ্য করা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে মার্কিন প্রভাব সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর হিলারি-ক্লিনটন-বারাক ওবামাদের বন্ধুখ্যাত ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার শীর্ষে আরোহন করেছেন। তাকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে প্রভাব বলয় তৈরি চেষ্টা করছে। এর আগে হাসিনা সরকারের সময় অনেক চেষ্টা করেও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর অনমনীয় মনোভাবের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করতে কার্যত ব্যর্থ হয়। শেখ হাসিনা বারবার অভিযোগ করে আসছিলেন, তার সরকারকে হটানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে। তিনি যদি তাদের কথামতো চলতেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ তাদের হাতে তুলে দিতেন, তাহলে ক্ষমতায় থাকতে কোনো সমস্য হতো না।
৫ আগস্টের ঘটনাকে আওয়ামী লীগ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হিসেবেই দেখছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকার পতনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে আসছিলো দলটি। ড. ইউনূসও তা স্বীকার করেছেন, দীর্ঘ পরিকল্পনা করে সরকারের পতন ঘটানো হয়েছে। এই আন্দোলনের মাস্টার মাইন্ডও আছে। একজন সমন্বয়ক খুব সম্প্রতি টেলিভিশন টকশোতে স্বীকারও করেছেন, আন্দোলন সফল করতে তারা মেট্রোরেলে আগুন, পুলিশ হত্যার মতো কর্মকাণ্ড করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ এই পরাজয় মানতে চাইছে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত শীতল। হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, আগুন, অত্যাচার-নির্যাতন ভারতকে ক্ষুব্ধ করেছে। এছাড়া ভারত সরকার ইউনূস সরকারের ওপর বিশ^াস আনতে পারছে না। যা শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি তাদের নিরঙ্কুষ আস্থা ছিলো। ইউনূস সরকারের নানা বিতর্কিত উদ্যোগ ও কর্মকাণ্ডে আস্থা আরও তলানিতে যাচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
এদিকে আওয়ামী লীগও নভেম্বরকে ঘিরে বিভিন্ন বার্তা দিচ্ছে নেতাকর্মীদের, আগামী এক মাসের মধ্যেই রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন নেতারা। আন্দোলন-সংগ্রাম নামছেন তারা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দেশে ফেরার বার্তাও বিভিন্নভাবে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, মার্কিন ক্ষমতায় ট্রাম্প আসলে বাংলাদেশের রাজনীতিতেও ক্ষমতা বদলের সম্ভাবনা আছে। প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তন হবে। আসলে কি তাই? নভেম্বরে কি তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘূর্ণিঝড়!