প্রায় ছয় বছর পর আবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে, চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ছাত্র রাজনীতির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই ডাকসু নির্বাচনের আগমুহূর্তে শিক্ষার্থী ও প্রার্থীদের মধ্যে যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তেমনই সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতের শঙ্কাও আতঙ্কে রাখছে।
যদিও ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে যেকোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা কিংবা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নির্বাচনকালীন তিন দিন (৮-১০ সেপ্টেম্বর) বিশেষ ডিপ্লয়মেন্টের মাধ্যমে পুরো ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ডিএমপি জানিয়েছে, নির্বাচনি কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই ঢাক বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় নিয়মিত পুলিশ সদস্যরা ছিলেন। তবে ভোট উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তিন দিনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), সাইবার সিকিউরিটি টিম, কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি), অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট এবং বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদেরও ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একটি সুস্থ ও সংঘাতমুক্ত নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ভোটের আগের দিন, ভোটের দিন ও পরদিন মিলিয়ে তিন দিনের জন্য বিশেষ ডিপ্লয়মেন্ট থাকবে। যেকোনও ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের একাধিক ইউনিট প্রস্তুত আছে।’
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তাজনিত কোনও শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় টিএসসিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল ২ হাজার ৯৬ জন পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি ডগ স্কোয়াড, সোয়াট টিম, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট, ডিবি পুলিশ, সিসিটিভি মনিটরিং ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে থাকবে। ৮টি চেকপোস্ট চালু করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
কমিশনার জানান, ৮ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা থেকে ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেউ অস্ত্র বহন করতে পারবেন না। তিনি সবাইকে আইন নিজের হাতে না নেওয়ার আহ্বান জানান এবং জাল আইডি ও সাইবার বুলিংয়ের বিষয়ে কঠোর নজরদারি চলছে বলে উল্লেখ করেন।
এবারের ডাকসু নির্বাচনে মোট ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে লড়ছেন ৪৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে আছেন ১৯ জন প্রার্থী। এ বছর মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ১৮ হাজার ৯৫৯ জন।



