যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক থেকে রেহাই পেতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তাই দেশটি থেকে পণ্য আনা আরও সাশ্রয়ী করতে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেশকিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় এবং সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার ও ছাড় দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর থেকেই এটি কার্যকর হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী শূন্য শুল্ক বা ছাড় অন্যান্য দেশের জন্যও প্রযোজ্য হবে।
সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমদানি পণ্যের শুল্ক-কর হার পর্যায়ক্রমে কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস, ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বলবৎ ন্যূনতম ও ট্যারিফ মূল্য পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করার অংশ হিসেবে বিদ্যমান সব ট্যারিফ মূল্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৮৪টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য প্রত্যাহার এবং ২৩টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য বৃদ্ধি করে শুল্ক মূল্য যৌক্তিক করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট উপস্থাপনের পর নির্দেশিকা জারি করে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক-কর বিষয়ক প্রস্তাবগুলো গতকাল থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শুল্ক প্রত্যাহার হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুতা, কাপড়, পেট্রোলিয়াম, কম্বাইন হার্ভেস্টর, কৃষি যন্ত্রপাতি, পোলট্রি ইনকিউবেটর, চিনি পরিশোধন যন্ত্রপাতি, বেকারি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি। তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে হার কমানো হয়েছে।
গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে। স্থগিত হওয়া শুল্ক যেন আগামীতে আর কার্যকর না হয় সেজন্য ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। সর্বশেষ গত মে মাসের মাঝামাঝিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দপ্তরে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।