গত ১৫ই আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন আজিজুর রহমান নামের এক রিকশাচালক। তার দাবি, শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন তিনি। পরে জনরোষে শিকার হন। জনতা তাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেয়।
গতকাল শনিবার জুলাই আন্দোলনের একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বিকেলে মামলার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জেনিফার জেরিনের আদালত জুলাই আন্দোলনের একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে আজিজুর রহমানের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনায় নিজের ফেসবুকে নির্মাতা আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘ধানমন্ডির ৩২-এ ফুল দিতে গিয়ে আটক রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো ফাইজলামি। তাঁকে জামিন দেয়া হোক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন, জুলুমের শাসন না।’
রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান।
আবেদনে বলা হয়, মামলার ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী এবং বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আজিজুর রহমানের মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে ধানমন্ডি-৩২ এ সাধারণ জণগণের হাতে আটক হওয়ায় সময় ধস্তাধস্তিতে সামান্য আঘাত পান। মামলা তদন্তের স্বার্থে আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
আসামির পক্ষে আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ঠা আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানাধীন নিউমার্কেট থেকে সায়েন্সল্যাব এলাকার মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী মো. আরিফুল ইসলাম। ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটায় আসামিরা গুলি, পেট্রোল বোমা ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে। গুলি ভুক্তভোগীর পিঠে ঢুকে গেলে তাৎক্ষণিক পড়ে যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ মাস চিকিৎসা শেষ সুস্থ হন। এ ঘটনায় এ বছরের ২ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন আরিফুল।