অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় আজকের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ অনুষ্ঠান বর্জন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
সোমবার (৪ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড।
তিনি বলেন, আজ (সোমবার) রাত ৯টা ১৫ মিনিটে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, তারা আগামীকালের (মঙ্গলবার) ‘জুলাই উদযাপন ও ঘোষণাপত্র প্রদান’ অনুষ্ঠানের দাওয়াতপত্র পৌঁছে দিতে চান। আমরা মনে করি, এটি অভ্যুত্থানের বিভিন্ন পক্ষকে প্রতীকীভাবে অন্তর্ভুক্ত করার এক প্রচেষ্টা। আমরা বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ইতোমধ্যে সাংগঠনিকভাবে এই কর্মসূচি বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
রিচার্ড আরও বলেন, বর্জনের পেছনে একাধিক কারণ থাকলেও আমরা একটি মূল কারণকে সামনে আনতে চাই। অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সরকার এখনও শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। সেই সঙ্গে আহত ও শহীদ পরিবারগুলোর যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে তাদের এই উদযাপন আয়োজনের নৈতিক অধিকার মানি না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় যে মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে, তা জুলাইয়ের আত্মত্যাগ ও প্রত্যাশার সম্পূর্ণ বিপরীত। যাদের রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই সরকার প্রতিষ্ঠিত, তাদের প্রতি অবহেলা ও অবজ্ঞা এখন স্পষ্ট। জবাবদিহিতার অভাব, কর্তৃত্ববাদী আচরণ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অবক্ষয় আমাদের এই সিদ্ধান্তে উপনীত করেছে।
ছাত্র ফেডারেশনের এই কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান ছিল একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পদক্ষেপ। যারা আজ সেই স্পিরিটের বিপরীত পথে হাঁটছে, তারা মূলত পুরোনো শোষণমূলক ব্যবস্থাকেই ফিরিয়ে আনতে চাইছে। তার প্রতিফলন আজ সমাজের সর্বত্র দৃশ্যমান।
তিনি বলেন, এই প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি, সরকার কর্তৃক আয়োজিত ‘জুলাই উদযাপন’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ মানে হবে সেই আত্মত্যাগ ও গণআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা। তাই আমরা এই অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল আছি এবং সব গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল শক্তিকে আহ্বান জানাই, তারাও যেন এই প্রতীকী প্রতিরোধে শামিল হয়।
এদিকে সোমবার (৪ আগস্ট) দিনগত রাত ২টায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ এক ফেসবুকে পোস্টে আজকের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, আজ বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।