বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাবেক সভাপতি ও অভিনেত্রী শমী কায়সারকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট তাঁকে জামিন আদেশ দেন।
এর আগে চলতি বছরের ৮ই এপ্রিল রাতে রাজধানী উওরা ৪নং সেক্টরের ৬ নম্বর রোডের ৫৩ নম্বর বাসা থেকে অভিনেত্রীকে আটক করা হয়। পর দিন ৯ই এপ্রিল ঢাকার উত্তরা এলাকার টঙ্গী সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান ইউসুফকে হত্যাচেষ্টা মামলায় শমী কায়সারকে গ্রেফতার আদেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত ৪ঠা আগস্ট টঙ্গী সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান ইউসুফ (২০) আন্দোলনে অংশ নেন। ওই দিন দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মিছিল নিয়ে উত্তরা পূর্ব থানাধনী আজমপুর এলাকায় পৌঁছালে আসামিদের ছোঁড়া গুলি জুবায়েরের বাম কাঁধে লাগার সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হন।
এরপর গত ২২শে আগস্ট ১১ জনকে এজাহারনামী ও অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী জুবায়ের। মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি অভিনেত্রী শমী কায়সার।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ই জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার চেষ্টা হয়। ওই ঘটনায় গত ২৯শে সেপ্টেম্বর উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়। সে মামলায় শমী কায়সারকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে রিমান্ড শেষে শমী কায়সারকে গত ৯ই নভেম্বর কারাগারে পাঠান ঢাকার আদালত।
ওই মামলায় ১০ই ডিসেম্বর জামিনে মুক্ত পান। এরপর থেকে নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন নব্বই এর দশকের জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী।
গত ৫ই আগস্ট ছাত্র বিক্ষোভ ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী সরকার পতনের পর ১৪ই আগস্ট দেশের ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন শমী কায়সার। তার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
শমী কায়সার শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে। তার মা পান্না কায়সার আওয়ামী লীগের সাবেক সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য। পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত শমী কায়সার কয়েক বছর ধরে সবখানে দলীয় প্রভাব খাটিয়েছেন। সবশেষ কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় বিটিভি ভবনে শিল্পীদের নিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ জানান তিনি। এছাড়া ‘আলো আসবেই’ নামে একটি বিতর্কিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তার কর্মকাণ্ড বেশ আলোচনায় আসে।