নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য ইউনিয়নের নবনিযুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও বিএনপির নেতাকর্মীদের দুষছেন ইউনিয়নটির প্যানেল চেয়ারম্যান। তার দাবি, চাঁদা না দেওয়া তালা ঝুলিয়েছে তারা।
পরিষদে তালা ঝুলানোর ঘটনায় বিপাকেপড়েছে স্থানীয়রা। সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। বিষয়টি সামনে আসার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান লাভলী বেগম জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পরিষদে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এর প্রেক্ষিতে সরকার গেজেটের মাধ্যমে তাকে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করে আসছিলেন। সমস্যা শুরু হয় ইউনিয়নে নবনিযুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ লিমনের দায়িত্ব গ্রহণের পর।
লাভলী বেগমের অভিযোগ, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে লিমন স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতার সঙ্গে মিলে বরাদ্দ সংক্রান্ত কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অজুহাতে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় গত ২৩শে জুলাই বিএনপি নেতা মো. ইব্রাহিম, সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাহেদ উদ্দিন, যুবদল নেতা আশরাফ উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন তাকে পরিষদে না যেতে হুমকি দেন।
লাভলী বেগম বলেন, ‘আমি সেদিন পরিষদ ত্যাগ করলে তারা প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিমনের সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর থেকে কার্যালয়ের দরজায় তালা ঝুলছে। সকল ধরণের দাফতরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিনই জনগণ এসে সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। ’
অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা মো. ইব্রাহিম ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাহেদ উদ্দিন বলেন, ‘লাভলী বেগম স্বৈরাচারীভাবে পরিষদ পরিচালনা করছেন। সরকারি বরাদ্দ লুটপাট করছেন। এমনকি স্বাক্ষর নকল করে অর্থ আত্মসাতের মতো গুরুতর অপরাধেও জড়িত রয়েছেন।’
এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরই আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তালা খুলে কার্যক্রম স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছি। যদি তদন্তে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’