আগস্ট ১৮, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
বিশ্ব

গাজায় ত্রাণের আটায় মাদক মেশানোর অভিযোগ

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পরিচালিত গাজার ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধে বিপর্যস্ত ও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জন্য বরাদ্দ আটার ব্যাগে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট মিশিয়ে দিচ্ছে—গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আটায় উচ্চমাত্রায় আসক্তি সৃষ্টিকারী পদার্থ মেশানোর মাধ্যমে গাজায় বেসামরিক জনগণের স্বাস্থ্য ও সামাজিক কাঠামোর ওপর এক ভয়াবহ নতুন অপরাধ চালানো হচ্ছে।’

এতে আরো বলা হয়, ‘এই অপরাধের জন্য আমরা পুরোপুরি ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীকে দায়ী করছি। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে আসক্তি ছড়িয়ে দিয়ে ফিলিস্তিনি সমাজকে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দেওয়া।’

অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের একজন ফার্মাসিস্ট ও লেখক ওমর হামাদ এক্সে বৃহস্পতিবার দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘খবরে জানা গেছে, ইসরায়েল আটার ব্যাগে করে অক্সিকোডন চোরাপথে গাজায় ঢোকাচ্ছে। শুধু আটার ব্যাগে লুকিয়ে নয়, এমনও দেখা যাচ্ছে যে আটাতেও ওই মাদক মেশানো রয়েছে।’

গাজার মাদকবিরোধী কমিটি জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত ত্রাণকেন্দ্র নামের মৃত্যুফাঁদ থেকে আসা খাদ্যসামগ্রী ভালো করে পরীক্ষা করুন এবং সন্দেহজনক কোনো উপাদান পেলে তাৎক্ষণিকভাবে তা কর্তৃপক্ষকে জানান।’

এই সপ্তাহে জাতিসংঘ গাজায় খাদ্যকে ‘অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের’ জন্য ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা করে।

জাতিসংঘ একে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানায়, ‘খাদ্য নেওয়ার চেষ্টা করা মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া বন্ধ করুন।’

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, মানবিক সহায়তা সংগ্রহ বা সহায়তার জন্য জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত ৪১০ জনের বেশি নিহত ও অন্তত তিন হাজার মানুষ আহত হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর মঙ্গলবারের এক ব্রিফিংয়ের আগে লিখিত বিবৃতিতে জানায়, ‘হতাশাগ্রস্ত ও ক্ষুধার্ত গাজাবাসী এখনো একটি অমানবিক দ্বিধার মুখোমুখি—হয় অনাহারে মারা যাওয়া, নয়তো খাদ্য নেওয়ার চেষ্টায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঝুঁকি নেওয়া।’

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) চলতি বছরের ২৬ মে থেকে গাজায় খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে।

এর আগে দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের খাদ্য ও রসদের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়, যা গণদুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা ডেকে আনে।

জাতিসংঘ মে মাসে জানায়, ‘গাজার শতভাগ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।’

সূত্র : আল অ্যারাবিয়া