জুন ৬, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
রাজনীতি

কালীগঞ্জে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকোবাড়িয়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ইউনুছ আলী (৬০) নামে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।

বুধবার (৪ জুন) ভোরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ইউনুছ আলী উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামের মৃত হবিবার রহমানের ছেলে। ইউনুছ আলীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ভাইপো অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান।

এদিকে এ সংঘর্ষের পর থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৩৫/৪০টি বাড়িতে ভাংচুর-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রোববার সকালের এ সংঘর্ষের দিনই তার আর এক ভাই মহব্বত আলী নিহত হন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সংঘর্ষে মহব্বত আলী নিহত হওয়ার ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন তার ছেলে এনামুল হক। এ মামলায় ৫৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩০/৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জামাল ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে অপর পক্ষ আরিফ হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে রোববার সকালে ইউনিয়নের নাকোবাড়িয়া গ্রামে নজরুল ইসলাম মোল্লার সমর্থকরা হামলা চালায়। এসময় আরিফের সমর্থকরা প্রতিরোধ গড়ে তুলে। পরে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে মহব্বত হোসেন নামের একজনের অবস্থা গুরুতর হলে তাকে ফরিদপুরে রেফার্ড করা হয়। রোববার দুপুরে ফরিদপুর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে কয়েকদিন ধরে দু’পক্ষ পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটার আশঙ্কার কথা পুলিশকে জানালেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সংঘর্ষের কিছু সময় আগেও পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা ব্যবস্থা নেয়নি। বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে তখনও পুলিশ ইউনিয়নে অবস্থান করছিল।

ছোট তালিয়ান গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরের দিকে নজরুল ইসলাম মোল্লার সমর্থক মহব্বত আলীর নিহতের খবর এলাকায় পৌঁছালে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৩৫/৪০টি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় গরু, ধান ও ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে গিয়েছে। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছি। পানি খাওয়ার একটি গ্লাসও বাড়িতে অবশিষ্ট নেই।

নাটোপাড়া এলাকার জলি খাতুন নামের এক নারী বলেন, সোমবার দুপুরের দিকে হঠাৎ ২০/৩০ জন এসে তাদের বাড়িতে ভাঙচুর করে লুটপাট করে। তার বোনের বিয়ের জন্য বানানো স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছে। টেলিভিশন, ফ্রিজসহ বাড়ির সবকিছু ভাংচুর করেছে।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ইউনুছ আলী মারা গেছে। এ নিয়ে দু’জন মারা গেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। তবে সংঘর্ষের আশঙ্কার কথা আমাকে কেউ আগে জানায়নি।