জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
বাংলাদেশ

ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর দায় জেলেদের, খাবার অধিকার শুধু ধনীর!

আলতাফ পারভেজ: তিন সপ্তাহের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ থাকছে। মূলত ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে এ নিয়ম। এসময় জেলেরা ইলিশ ধরতে পারে না। সামনে আবার শুরু হবে জাটকা ধরায় দীর্ঘ আরেক নিষেধাজ্ঞা। এভাবে দু’দফায় ইলিশ ধরা ও বেচাবিক্রি বন্ধ থাকবে বিধায় বাজার চড়া থাকবে এই অনুমানে গত কয়েকদিন ঢাকাসহ প্রধান শহরগুলোর ধনীরা ব্যাগ ভরে মাছ কিনেছেন। অনেকটা কোরবাণী ঈদের মাংস জমানোর মতো রাজধানীর অনেকে ফ্রিজে ইলিশ ভরেন। ফলে বেচাকেনা বন্ধের মাঝেও ধনীদের খাবার টেবিলে ইলিশ থাকবে।
দু’ দফায় প্রথমে মা-ইলিশ এবং পরে ছোট ইলিশ ধরা যে বন্ধ থাকবে সেটা মুখ্যত ধনাঢ্যদের সারা বছর ইলিশ-সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখবে।

জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ করে করে বিগত দেড় দশকে ইলিশের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তাতে ইলিশের দাম কমেনি। যে ইলিশের কেজি এখন গড়ে দেড় হাজার—গত বছর সেটা এক হাজার ছিল। আগামী বছর হয়তো আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে ইলিশ নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে গেছে। সবই মার্কেট সিন্ডিকেটের লীলা। তারা ছিল-আছে-থাকবেও নিশ্চয়ই।

বর্তমানে দেশে যে পরিমাণ ইলিশ আহরণ হয় তা কেজি’র হিসাবে লোকসংখ্যার প্রায় সাড়ে তিন গুণ। ফলে কোটি কোটি মানুষ যে ইলিশ খায় না বা খেতে পারে না তার অর্থই হলো উপরতলার দশ-বিশভাগ মানুষ এটা বেশ যথেষ্ট পরিমাণেই পান এবং খান।
অন্যদিকে, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে যেয়ে মা-ইলিশ ও জাটকা রক্ষার দায় যাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সেই জেলেদের বছরের এই সময় থাকতে হয় দীর্ঘ কর্মহীনতায়। বেকারির এই জগতটা ভৌগলিকভাবে বেশ বড়। প্রায় দেড় ’শ উপজেলা জুড়ে ইলিশ শিকারী জেলেরা থাকে।

এই জেলেদের এই সময় ‘ক্ষতিপূরণ’ হিসেবে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। সেই চালের বণ্টন নিয়েও আছে অনিয়মের নানান গল্প। তারপরও দেশে মাছের উৎপাদন বাড়াতে জেলেরা এই নিয়ম মেনে নিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো মানুষের জীবন কি কেবল দিনে এক-দেড় কেজি চাল দিয়েই চলে? ধনীদের মুখরোচক প্রোটিনের যোগান নির্বিঘ্ন রাখার দায় কেবল জেলেপল্লীগুলোর? তাদের জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ আরও বাড়াতে সমস্যা কোথায়? ফেসবুক থেকে