মাসুদ রানা :[গত ৩০শে অগাস্ট ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ও নাগরিক সমাবেশে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক জনরাষ্ট্র মঞ্চ’ নামে আত্মপ্রকাশিত আমাদের সংগঠনটি ‘কেমন রাষ্ট্র চাই বাংলাদেশ?’ শীর্ষক আলোচনায় যে ‘দশ-বিন্দু রূপরেখা ও আশু পাঁচ করণীয়’ উপস্থাপন করে, তারই প্রাসঙ্গিক অংশ নীচে তুলে ধরা হলো।]
জুলাই-অগাষ্টের ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের উচ্চকণ্ঠে স্পষ্ট দাবী ছিলো একটিঃ “এক দফা এক দাবী, শেখ হাসিনা কবে যাবি”, যা গত ৫ই অগাষ্টে পূরিত হয়েছে, এবং এর সাথে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অভিযুক্ত বাধা দূর হয়েছে।
সুতরাং নির্বাচন না দিয়ে প্রধান-সহ সকল উপদেষ্টা তাঁদের শপথ ভঙ্গ করে এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংবিধান সংস্কার-সহ যে-সকল কাজ করছেন, তাতে তাঁরা দেশ-জাতি-রাষ্ট্রের ভবিষ্যতকে সাংঘাতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছেন।
আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ ভঙ্গ করে নিজেদেরকে দেশ ও জাতির কাছে অবিশ্বস্ত করে তুলেছে এবং ঘনায়মান সঙ্কটের জন্ম দিয়েছে, যার নিরসন না হলে, প্রেক্ষাপটে চলন্ত আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্বের অভিঘাতে আমাদের দেশ-জাতি-রাষ্ট্র চরম সঙ্কটে নিপতিত হবে। আমরা সঙ্কট নিরসনের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নিম্নলিখিত পাঁচটি আশু দাবী জানাইঃ
(১) সেনাবাহিনীর সহায়তায় সারা দেশের সর্বত্র আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান খুলে রেশনিংয়ের মাধ্যমে নাগরিকদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
(২) প্রধান-সহ সকল উপদেষ্টা তাদের কৃত ‘’আমি সংবিধানের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান করিব’ শপথ অনুযায়ী সংবিধান শুধু রক্ষাই নয়, সংবিধানের সমর্থনে বিবৃতি দিয়ে এবং সংবিধান সংস্কার কমিটি বিলুপ্ত করে জনগণের কাছে বিশ্বস্ততা নিশ্চিত করবেন, অন্যথায় পদত্যাগ করবেন।
(৩) প্রধান-সহ সকল উপদেষ্টা ‘’আমি প্রীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হইয়া সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী যথা বিহিত আচরণ করিব’’ বলে যে- শপথ করেছেন, তা তাঁরা পালন করবেন এবং জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সনদে ও বাংলাদেশের সংবিধানে স্বীকৃত নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করবেন।
(৪) জনগণের ভৌটে নির্বাচিত সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রকারের সামরিক জোটে অংশগ্রহণ এবং বাংলাদেশের জল-স্থল-অন্তরীক্ষের কোথাও কোনো দেশকে সামরিক-অসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
(৫) জনগণের স্বাধীন ইচ্ছার প্রতি সম্মান রেখে, জাতিসঙ্ঘের নজরদারিতে, জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করে তা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে, যাতে জনগণের সার্বভৌম পার্লামেণ্টই তাদের রাষ্ট্রীয় জীবন নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
০১/১১/২০২৪
ঢাকা, বাংলাদেশ