সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কবরস্থান থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতার বাবা, দাদা ও ভাইসহ ৪ স্বজনের কবর ভেকু মেশিন দিয়ে ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৮ মে) উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের উনুখাঁ পাগলা পীরের কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সবশেষ বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অপসারিত চেয়ারম্যান ও সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম হিরো।
কবর ভাঙার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে হয়েছে। এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে।
রফিকুল ইসলাম হিরো বলেন, আমার বাবা আব্দুল জলিল বিএসসি উনুখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সহকারী শিক্ষক এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি মারা গেলে উনুখাঁ কবরস্থানে পাগলা পীর (রহ.) মাজারের পূর্বপাশে ঈদগাহ মাঠের প্রাচীরের উত্তর পাশে দাফন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম, দাদা রাজ উদ্দিন প্রমানিক ও ছোট দাদা খলিলুর রহমানকে মারা গেলে তাদের বাবার কবরের পাশাপাশি দাফন করা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিটি কবর ইট দিয়ে বাঁধানো ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কবরস্থানের নতুন কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটির তত্বাবধানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে গত ২৮ মে ওই চারটি কবর ভেকু মেশিন দিয়ে গুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে উনুখাঁ কবরস্থান কমিটির সভাপতি ও ইসলামী ব্যাংক সিরাজগঞ্জ শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার সেলিম রেজা বলেন, করবস্থানটি অনেক পুরাতন। আমরা দায়িত্ব দেওয়ার পর কবরস্থানে থাকা বেশকিছু গাছ বিক্রি করেছি। সীমানা প্রাচীর ও মাটি ভরাট করতে হবে। এজন্য ভেকু মেশিন দিয়ে কবরস্থানে মাটি লেবেল ও গাছের শিকর তোলার সময় ওই ৪টি করবও ভেঙে গেছে। এটা কোনো প্রতিহিংসা থেকে করা হয়নি। করবস্থানে উন্নয়নের স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে ভেঙ্গে ফেলা কবরগুলো কমিটির পক্ষ থেকে আবারও বাঁধাই করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উনুখাঁ কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উনখাঁ পাগলা পীর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, সংস্কারের স্বার্থে ওই ৪টি কবরসহ কবরস্থানে থাকা অন্তত ১০/১৫টি বাঁধাই করা কবর ভেঙে ফেলা হয়েছে। কোনো প্রতিহিংসা থেকে কবরগুলো ভাঙা হয়নি।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া ইউএনও আবু সালে মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, কবর ভাঙার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে থানার ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।