জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
মতামত

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থার উন্নতি যেভাবে সম্ভব

আরিফ জেবতিক : বিশ্বসেরা ৮০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই, এই খবরটার শিরোনাম পড়েই মনটা খারাপ হয়ে গেল।
এর মানে হলো দুনিয়া কোথায় চলে যাচ্ছে, আমরা তার সাথে তালই মেলাতে পারছি না।
এই সেক্টরটায় সিরিয়াস কাজ করা দরকার। আমাদের অন্তত ১০টা বিশ্ববিদ্যালয়কে টার্গেট করা দরকার, যেগুলোকে আগামী ৩ বছরের মধ্যে আমরা বিশ্বের প্রথম ১শটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢোকানোর পরিকল্পনা করতে পারি। এই টার্গেট হয়তো সফল হবে না। কিন্তু একটা অনুপ্রেরণা তৈরি হবে। ১শর মধ্যে না ঢুকতে পারলেও আমরা হয়তো ৩শর মধ্যে ঢুকতে পারব। ১০টা বিশ্ববিদ্যালয়কে না পারলেও হয়তো ৫টাকে ঢুকাতে পারব।
এটা কঠিন কিন্তু খুব খুব কঠিন, এরকম না। এসব বিশ্ব তালিকার কিছু নির্দিষ্ট পয়েন্ট আছে, যেগুলো লো হ্যাংগিং ফ্রুট, মানে সহজে করা সম্ভব। কিন্তু আমরা হয়তো করি না কারন আমাদের চর্চায় নেই, এখন করে ফেললেই হয়। এভাবে কোন কোন জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে সেগুলো চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশে কমপ্লায়েন্সের অসাধারণ রেকর্ড করেছিল দেশের গার্মেন্ট সেক্টর। একসময় এমন অবস্থা ছিল যে, বিদেশীরা বাংলাদেশের গার্মেন্ট কারখানা শুনলে ঘেন্নায় মুখ ফিরিয়ে নেয়ার অবস্থা। ধরেই নিয়েছিল, সব ঘিঞ্জি বস্তির মধ্যে পলেস্তরা খসা ঘুপচি বিল্ডিংয়ে সবগুলো কারখানা। না আছে ছুটি, না ওভারটাইম, না শিশু শ্রমিক বন্ধের কোন চেষ্টা। সেখান থেকে কিন্তু বাংলাদেশের গার্মেন্ট কারখানাগুলো ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি সবাই কীভাবে পরিকল্পনা আর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছে। এখনও যে খুব ভালো অবস্থায় পৌঁছেছে সেই দাবি করছি না, কিন্তু কুড়ি বছর আগের তুলনায় আকাশ-পাতাল তফাৎ হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থারও উন্নতি এভাবে সম্ভব। একটি কেন্দ্রীয় সেল করা যেতে পারে, যারা বিষয়টি মনিটর করবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মোদ্যোমী শিক্ষকদের নিয়ে কমিটি করা হবে। কমিটি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করবে, সমাধানের উপায় নির্ধারন করবে। কেন্দ্রীয় সেল থেকে রিসোর্স দিয়ে সহায়তা করা হবে। নিবিঢ়ভাবে তত্ত্বাবধান করা হবে। প্রতি ৩মাসে প্রগ্রেস রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করা হবে।

টার্শিয়ারি শিক্ষার মান আমাদের উন্নত করতেই হবে। তাহলে আমাদের ছাত্রদেরকে আরা স্থানীয় চাকুরির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না, সহজেই তাঁরা বিশ্ব চাকুরি বাজারে ঢুকে পড়তে পারবে।
বহির্বিশ্বের দিকে তাকানোটা বহু আগেই দরকার ছিল, অন্তত এখনই যদি শুরু না করি তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আজকের বিশ্বায়নের যুগে খেই হারিয়ে ফেলবে। তাঁরা কোন চান্সই পাবে না। আমরা যেন তাঁদের এতবড় ক্ষতিটা না করে যাই। লেখক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। সূত্র : https://www.facebook.com/jebtik