জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
লেডিঞ্জে গ্রেন্ড, স্টকহোম,সুইডেন
রাজনীতি

আওয়ামী লীগের বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচার বা পত্রিকায় ছাপাতে দেওয়া হচ্ছে না : হাছান মাহমুদ

ভওস : যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলা স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল এস’-এর মতামত বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘অভিমত’-এ গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর প্রথমবার আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। গত ৩ নভেম্বর ‘আওয়ামী লীগ: তটস্থ, হতাশ, কোনঠাসা?’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কথা বলেন তিনি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এখন কি ভিন্নমতকে দমন করা হচ্ছে না? আওয়ামী লীগের কোনো বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচার বা পত্রিকায় ছাপাতে দেওয়া হচ্ছে না। কয়েকদিন আগে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা শহরে বিশাল সমাবেশ হয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারক লিপি দিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি আমি। সেটি কি কোনো টেলিভিশন চ্যানেল কাভার করেছে? কোনো পত্রিকায় কি সেই নিউজ আছে? চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের কয়েক লাখ লোকের সমাবেশ হয়েছে। কোনো টেলিভিশন কি গিয়েছে সেখানে? যায়নি। কোনো কোনো টেলিভিশন হয়তো ফুটেজ সংগ্রহ করে পরে প্রচার করেছে। একইভাবে পত্রিকায়ও হয়তো কোনো রকম দায় এড়ানোর জন্য ছাপিয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল আমার সাক্ষাতকার নিতে চেয়েছে। পরে তারা জানালো যে, আমরা সরকারের অনুমোদন পাইনি। সেজন্য আমরা আপনার সাক্ষাতকার নিতে পারছি না। এ ধরনের দমননীতি কি আমাদের সময় ছিলো? ছিলো না। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় সমাবেশ হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া আসলেও কোনো টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার করছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পত্রিকা নিজেদের বিশ^াসযোগ্যতা ধরে রাখার জন্য হয়তো ছাপছে। আমাদের বিরুদ্ধে মনগড়া সংবাদ প্রচার বা প্রকাশ করা হচ্ছে। একজন বানিয়ে দিচ্ছেন, সবাই তা ছাপছে। আমি প্রতিবাদ পাঠিয়েছি, একটি গণমাধ্যম ছাড়া কেউ তা প্রকাশ করেনি। কারণ কী? বলা হয়েছে,সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। এগুলো কি ছিলো আওয়ামী লীগের শাসনামলে? ভিন্নমত দমনে সর্বোচ্চ নির্দেশ আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের আগে এবং পরে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। পিটিয়ে মধ্যযুগীয় বর্বতায় হত্যা করা হয়েছে। এগুলো কি হত্যাকাণ্ড নয়? শুধু জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ড, হত্যাকাণ্ড তো এখনো চলছে। এসব নিয়ে তো কথা বলতে শুনি না। এসবকে হত্যাকাণ্ড মনে করা হচ্ছে না! ১৫ জুলাই থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হত্যা, পুলিশ হত্যা, আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে লুটপাট, সাধারণ মানুষের বাড়িতে লুটপাট, বাংলাদেশ টেলিভিশন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া, মেট্রোরেল পুড়িয়ে দেওয়াসহ যেসব ঘটনা ঘটেছে সেসব বিষয়ে কোনো মামলা করা যাবে না! সেগুলোর কোনো বিচারও হবে না। ইনডেমনিটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কোন দেশে বসবাস করছি আমরা?

আজ জাতীয় জীবনে হতাশা নেমে এসেছে। বলা হয়েছিলো, আওয়ামী লীগকে বিদায় দেওয়ার পর দ্রব্যমূল্যের দাম কমবে। এখন দ্রব্যমূল্যের দাম কমেছে তো নাহ, বেশ! বাজারে গিয়ে মানুষ এখন হা-হুতাশ করছে। জিডিপির গ্রোথ রেট কোথায় গিয়ে নেমেছে? যে সমস্ত ভোগ্যপণ্য আমদানি হয় না সেসবের দাম কেন বাড়লো? ডিমের হালি কেন এতো টাকা হলো? ডিমের দাম, কাচা মরিচ, শাক-সবজি দাম কমানোর জন্য কি সময় দেওয়া দরকার?

কোনো সরকারই শতভাগ নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারবে না। সরকারে থাকলে ভুল হবেই। রাষ্ট্র পরিচালনায় আমাদেরও অনেক ভুল ছিলো। রাষ্ট্রপরিচালনায় একরকম ভুল, রাজনৈতিক ভুল আরেক রকম। আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, বিএনপি অবশ্যই সবসময় নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। তবে যেহেতু আমরা দায়িত্বে ছিলাম, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ২০১৪ ও ২০২৪ সালে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে না পারাটা আমাদের একটি রাজনৈতিক ব্যর্থতা ছিলো। যদিও বিএনপি সবসময় আমাদের ব্যর্থ করার চেষ্টা করেছিলো।